বিশ্বের যে কয়েকটি অঞ্চলকে মারাত্মক সংঘাতপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয় কাশ্মীর তাদের মধ্যে শীর্ষে। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর থেকে এই ভূ-স্বর্গ নিয়ে এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সর্বদা যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান রয়েছে। ভারত শাসিত মুসলিম প্রধান কাশ্মীরে সহিংসতা এক দৈনন্দিন ব্যাপার। গত সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরে ১০ হাজার অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সেখানে আরও ২৫,০০০ সেনা মোতায়েন করতে চলেছে মোদী সরকার।
দেশটির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ভোর থেকেই সেনা জওয়ানরা কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছাতে শুরু করেছে এবং শুক্রবার সকাল থেকে তাদের রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে এত বড় সংখ্যক সেনা মোতায়েনের পর বিভিন্ন ধরনের জল্পনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করতে নিরাপত্তা বাহিনীর ১০০ কোম্পানি (প্রতি কোম্পানিতে ১০০ সেনা রয়েছে) সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে বলে গত সপ্তাহেই ভারত সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বুধবার (৩১ জুলাই) জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক স্পষ্টতই ৩৫-এ ধারা অপসারণের জল্পনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন যে, এরকম কোনো পরিকল্পনা নেই।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং বছরের শেষের দিকে রাজ্যটিতে নির্বাচন পরিচালনা করতে অনুরোধ করছিলেন। জনাব আবদুল্লাহ, যার পিতা ফারুক আবদুল্লাহ একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, জাতীয় সম্মেলনের প্রতিনিধি দলের অংশ ছিলেন, তিনিও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কাশ্মীর উপত্যকার নাজুক পরিস্থিতি খারাপ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
অমরনাথ যাত্রার সুরক্ষায় নিযুক্ত কিছু সেনাকে আইন-শৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে স্থানান্তরিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, অমরনাথ যাত্রার সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রায় ৪০ হাজার লোক মোতায়েন করা হয়েছে। উপত্যকায় মোতায়েন করা সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনীকে অবিলম্বে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের শ্রীনগরে পৌঁছেছেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান আগামী দুই দিন কাশ্মীরেই থাকবেন। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার উপত্যকায় ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের দুই দিনের সফর সেরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ফিরে আসার পরেই এই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
Development by: bdhostweb.com